আয়াত ৪৬ | রুকু ০২ | অবতীর্ণের অনুক্রম ০৭৯
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।
  1. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা নির্মমভাবে (পাপীদের আত্মা) ছিনিয়ে আনে,
  2. শপথ (ফেরেশতাদের) যারা সহজভাবে (নেককারদের রূহ) খুলে দেয়,
  3. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (আমার হুকুম তামিল করার জন্য) সাঁতরে বেড়ায়,
  4. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (হুকুম পালনে) দ্রুত এগিয়ে চলে,
  5. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (নিজেদের) কাজ সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে,
  6. (যেসিন কেয়ামত আসবে), সেদিন ভূকম্পনের এর প্রচন্ড ঝাঁকুনি হবে।
  7. (কবর থেকে সবাইকে উঠানোর জন্য ) সাথে সাথে আরেকটি প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হবে;
  8. সেদিন (মানুষের) অন্তরসমূহ ভয়ে কম্পমান হবে,
  9. তাদের সবার দৃষ্টি হবে ভীত-সন্ত্রস্ত।
  10. তারা বলে, সত্যিই কি আমাদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে?
  11. আমরা পঁচে-গলে হাড্ডিতে পরিণত হয়ে যাওয়ার পরও (কি তা ঘটবে)?
  12. তারা বএল, যদি আমাদের আগের জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে সেটা তো হবে খুবই লোকসানের বিষয়।
  13. অবশ্যই তা হবে বড় ধরণের একটি গর্জন;
  14. (গর্জন শেষ না হতেই) হঠাৎ দেখা যাবে, তারা (কবর থেকে উঠে সবাই যমীনের উপর ) সমবেত হয়ে গেছে।
  15. (হে নবী,) তোমার কাছে কি মূসার কাহিনী পৌঁছেছে?
  16. তাকে যখন তাঁর রব পবিত্র ‘তুয়া’ উপত্যকায় ডেকে বলেছিলেন-
  17. তুমি যাও ফেরাউনের কাছে, কারণ সে (তার মালিকের) বিদ্রোহ করেছে,
  18. তুমি (তাকে) জিজ্ঞাসা করো, তুমি কি (ঈমান এনে) পবিত্র হতে চাও?
  19. আমি তোমাকে তোমার মালিকের (কাছে পৌঁছার একটা) পথ দেখাতে পারি, অতঃপর তুমি (তাঁকে) ভয় করবে,
  20. এরপর সে তাকে (আমার পক্ষ থেকে নবুওতের) বর একটি নিদর্শন দেখালো,
  21. সে (আমার নবীকে) মিথ্যা সাব্যস্ত করলো এবং সে (তাঁর) বিরুদ্ধাচারণ করলো,
  22. অতঃপর (ষড়যন্ত্র করার উদ্দেশ্যে) সে পিছনে ফিরে গেল,
  23. সে লোকজন জড়ো করলো এবং তাদের ডাক দিলো-
  24. আর বললো, আমি হচ্ছি তোমাদের সবচেয়ে বড়ো ‘রব’,
  25. অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাকে আখেরাত ও দুনিয়ার আযাবে পাকড়াও করলেন;
  26. অবশ্যই এমন লোকের জন্য এতে শিক্ষার নিদর্শন রয়েছে, যে (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে,
  27. (তোমরা বলো,) তোমাদের (দ্বিতীয় বার) সৃষ্টি করা কি বেশি কঠিন, না আকাশ সৃষ্টি করা বেশি কঠিন? আল্লাহ তায়ালাই তা বানিয়েছেন।
  28. আল্লাহ তায়ালা (শূন্যের মাঝে) তাকে উঁচু করে রেখেছেন, অতঃপর তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন,
  29. তিনি রাতকে (অন্ধকার দিয়ে) ঢেকে রেখেছেন, আবার তা থেকে দিনকে বের করে এনেছেন,
  30. এরপর যমীনকে তিনি (বিছানার মতো করে) বিছিয়ে দিয়েছেন;
  31. তা থেকে তিনি তার পানি ও উদ্ভিদরাজি বের করেছেন,
  32. তিনি পাহাড়সমূহকে (যমীনের গায়ে পেরেকের মতো) গেড়ে দিয়েছেন,
  33. (এগুলো হচ্ছে ) তোমাদের ও তোমাদের জন্তু-জানোয়ারদের (উপকারের) জন্য;
  34. তারপর যখন বড় বিপর্যয় (তোমাদের সামনে এসে ) হাযির হবে,
  35. সেদিন মানুষ একে একে সবকিছুই স্মরণ করবে যা (করার জন্য সে দুনিয়ায় ) চেষ্টা করেছে,
  36. সেদিন সে ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম খুলে ধরা হবে, যে (তা) দেখতে পাবে।
  37. অতঃপর যে ব্যক্তি সীমা লংঘন করেছে-
  38. এবং (পরকালের তুলনায়) দুনিয়ার জীবনকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে,
  39. অবশ্যই জাহান্নাম হবে তার (একমাত্র) আবাসস্থল;
  40. (আবার) যে ব্যক্তি তার মালিকের সামনে দাঁড়ানো (-র দিনটিকে) ভয় করেছে এবং (এ ভয়ে) নিজের নফসকে কামনা-বাসনা থেকে বিরত রেখেছে,
  41. অবশ্যই জান্নাত হবে তার অনন্ত ঠিকানা;
  42. তারা তোমার কাছে জানতে চায় কেয়ামত কখন সংঘটিত হবে?
  43. (আসলে) সে সময়ের কথা বর্ণনা করার সাথে তোমার কী সম্পর্ক?
  44. তার (আগমনের) চুড়ান্ত (জ্ঞান একমাত্র) তোমার মালিকের কাছেই রয়েছে;
  45. তুমি হচ্ছো সে ব্যক্তির জন্য সাবধান কারী, যে এ (দিনটি)-কে ভয় করে;
  46. যেদিন এরা কেয়ামত দেখতে পাবে, সেদিন (এদের মনে হবে) তারা (দুনিয়ায়) এক বিকাল অথবা এক সকাল পরিমাণ সময়ের চাইতে বেশি সময় অতিবাহিত করেনি।